যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরে (ইউএসটিআর) ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এখনও ওই সুবিধা স্থগিত থাকার কথা জানিয়ে শ্রম অধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনার কথা বলা হয়েছে।
তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংগঠন ‘আমেরিকান অর্গানাইজেশন অব লেবার-কংগ্রেস ফর ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এএফএল-সিআইও) এর আবেদনে ২০১৩ সালের ২৭ জুন বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়।
তার আগে জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেসের (জিএসপি) আওতায় বাংলাদেশ পাঁচ হাজার ধরনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধায় রপ্তানি করতে পারত।
২০১২ সালে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এই সুবিধার আওতায় তিন কোটি ৪৭ লাখ ডলারের তামাক, ক্রীড়া সরঞ্জাম, চিনামাটির তৈজসপত্র ও প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করেন, যাতে তারা শুল্ক ছাড় পান ২০ লাখ ডলারের মতো।
অবশ্য বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য ‘তৈরি পোশাক’ ওই রেয়াত পেত না।
বাংলাদেশের জিএসপি স্থগিত হওয়ার মাসখানেকের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড প্রেফারেন্স এক্সটেনশন আইনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওযায় তাদের জিএসপি ব্যবস্থাই স্থগিত হয়ে যায়।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস জিএসপি প্রোগ্রাম নবায়নের প্রস্তাব অনেুমোদন করে এবং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গত ২৯ জুন এ সংক্রান্ত আইনে সই করেন।
এতে বলা হয়, বন্ধ হওয়ার সময় থেকে অর্থাৎ, ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই থেকেই এ সুবিধা কার্যকর বলে ধরা হবে এবং এর মেয়াদ হবে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
আগে যে ১২২টি দেশ ও অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এই শুল্কমুক্ত সুবিধা পেত , এখনও তাদের ক্ষেত্রেই এ সুবিধা প্রযোজ্য। সার্ক জোটের দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তান এই তালিকায় থাকলেও বাংলাদেশকে ফেরানো হয়নি।
অথচ জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র যে ১৬টি শর্ত দিয়েছিল, তার প্রায় সবগুলোই বাংলাদেশ পূরণ করেছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। শর্ত পূরণের অগ্রগতি জানিয়ে গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরে প্রতিবেদনও পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।
অবশ্য তার আগে যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার বলেছে, শর্ত পূরণে বাংলাদেশ ‘কিছু অগ্রগতি’ দেখালেও তা জিএসপি ফিরে পাওয়ার জন্য ‘যথেষ্ট নয়’।
একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, বাংলাদেশের আড়াই হাজার কোটি ডলারের রপ্তানির মধ্যে প্রায় ২১ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে যায়।
0 Comment to "যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি ফিরলেও বাংলাদেশ ফেরেনি"
Post a Comment