Tuesday 11 August 2015

রাষ্ট্রপতির পদ অপ্রয়োজনীয়: উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ

রাজনীতি-নিরপেক্ষ সুশীল সমাজের একাংশের প্রতিনিধিত্বশীল 'উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ' এর সদস্য ড. শাহদীন মালিক মনে করেন, ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে যাচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লিখিত ভাষণ দেওয়া ছাড়া রাষ্ট্রপতির আর কোনও কাজ নেই। বর্তমানে প্রেসিডেন্টের পদই অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ’ এর আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এ মত পেশ করেন।
এ বিষয়ে শাহদীন মালিক আরও বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। প্রধানমন্ত্রীকেও নিয়োগ দেন। প্রধান বিচারপতি নিয়োগে তো প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিতে হতো। আর প্রধানমন্ত্রী তো সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা। তিনি তো এমনিতেই হবেন। ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য রাষ্ট্রপতির কিছু কাজ দরকার। বাংলাদেশে প্রকৃত সংসদীয় গণতন্ত্র নেই। ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণে সরকারকেও সময় দেওয়া দরকার। আর এখন তো বাংলাদেশে প্রকৃত সংসদীয় সরকারই নেই।
গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, সংসদকে কার্যকর, রাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্বাচন, সংসদ সদস্যদের ফ্লোর ক্রসিং সুবিধাসহ ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য রক্ষায় সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন।
তাদের মতে, গত কয়েক দশকে অনেকগুলো রাজনৈতিক ও অথনৈতিক পরির্বতন ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ ও বিভাজনের কার্যকারিতা সম্পর্কে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ স্বাধীন কমিশন, মন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে খোলামেলা বির্তক, আলোচনা ও অনুমোদনের ব্যবস্থা থাকা উচিত। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধনের জন্য কমিশন গঠন করা যেতে পারে। 
‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ’-এর মূল উদ্যোক্তা সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকে টিআইবির চেয়ারম্যান এম. হাফিজ উদ্দিন খান, আইনজীবী ড.শাহদীন মালিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. রওনক জাহান,  সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সাংবাদিক মুহম্মদ জাহাঙ্গীর, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।  গোলটেবিল বৈঠকে র আলোচ্য বিষয় ছিল ‘পূর্ণ গণতন্ত্রের জন্য ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ বা ভারসাম্য।’
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র না থাকলে রাষ্ট্রে গণতন্ত্র থাকবে না। আমাদের রাজনৈতিক দলে যে আচরণ করে তা সিন্ডিকেটের মতো। নেতারা সিভিল সোসাইটিকে সহ্য করতে পারেন না। রাজনৈতিক নেতারা মনে করেন তারা ছাড়া রাষ্ট্র নিয়ে আর কেউ কথা বলতে পারবে না।
সংবিধান সংশোধনের জন্য কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে সাংবাদিক জাহাঙ্গির বলেন,  সংবিধান সংশোধন গোলটেবিল বৈঠক করে সম্ভব নয়। এজন্য গবেষণার প্রয়োজন। গণতন্ত্রের স্বার্থে সংবিধানের দুর্বলতা দূর করতে হবে। আমরা সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে বড়াই করি, এটাই কি আর্দশ সংসদীয় পদ্ধতি।

Share this

0 Comment to "রাষ্ট্রপতির পদ অপ্রয়োজনীয়: উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ"

Post a Comment